• শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ৩ জৈষ্ঠ ১৪২৯

সারা দেশ

থানার পতিত জমিতে সবজি ও মৎস্য চাষ, বাম্পার ফলনের রেকর্ড

ওসি রাশেদুজ্জামানের পুরস্কার লাভ

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৫ জানুয়ারি ২০২৩

আব্দুল মান্নান পল্টন,ময়মনসিংহ ব্যুরো:
থানার পতিত জমিতে সবজি ও মৎস্য চাষসহ জমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করায় বিশেষ পুরস্কার লাভ করেছেন ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান।
গত রবিবার বিকেলে ময়মনসিংহের জেলা পুলিশ সুপার এসপি মাছুম আহম্মেদ ভুঞা বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান ওসি রাশেদুজ্জামানের হাতে এই সম্মামনা স্মারক তুলে দেন। থানা বাউন্ডারির ভিতরে সবুজের সমারোহ। শিম, টমেটো, মুলা, আলু, বেগুন, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লাউ, লালশাক, ডাটাশাক, পুঁইশাক, ধনিয়া পাতা, পেঁপে, পুদিনা পাতাসহ বিভিন্ন জাতের সবজির বাগান। বাগানের পাশেই পুকুর। বিকট শব্ধ ও সৃষ্ট পানির ঢেও ষ্পষ্ট জানান দিচ্ছে মাছে ভরপুর পুকুর। নানা জাতের সবজির বাম্পার ফলন। উৎপাদিত বাম্পার ফলনে পেশাদার কৃষকদেরকেরও যেন হার মানিয়েছে। পুকরে মাছের লাফা লাফি সৃষ্ট থৈ থৈ শব্দ সব মিলে অপরুপ সেজেছে শুভ্রতায়। কুয়াশার চাদরে মোড়া ঘোলাটে আকাশ। হিমেল হাওয়া, হাড় কাপাঁনো শীত। বাগানের পরিচর্যা করছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা সন্তান পাগলা থানার ওসি মোহাম্মদ রাশেদুজ্জামান। গতকাল মঙ্গলবার সকাল পোনে ৯টার দিকে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানায় সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে এমন মনোরম চিত্র। থানার ভিতরে দাপ্তরিক কক্ষ গুলো পরিস্কার, পরিচ্ছন্ন,পরিপাটি করে সাজানো গুছানো। সেবা নিতে এসে সবাই যেন হারিয়ে যাচ্ছেন অপরুপ প্রকৃতি আর সবুজের সমারোহে। কেউ ছুটে যাচ্ছেন ফসলের মাঠে বাম্পার ফলন দেখতে। আবার অনেকেই ছুটছেন মাছে ভরপুর পুকুর ঘাটে। অপরুপ প্রকৃতি আর বাম্পার ফলনে মনোমুগ্ধ হয়ে ছবি তুলছেন যুবক থেকে শুরু করে বয়স্করাও। ঘড়ির কাটা সকাল সাড়ে ৯টা। দত্তের বাজার এলাকার বাসীন্দা ইট ভাটার মালিক মোস্তফা ও পলাশ নামে দু’জন এসেছেন ওসি রাসেদুজ্জামানের সাথে দেখা করতে। কথা হয় এ দু’জনের সাথে তারা এই প্রতিবধককে জানান গত ্এক সপ্তাহ আগে সকাল ৯টার দিকে তারা থানায় এসেছিলেন। সেদিনেও তারা ওসি রাশেদুজ্জামানকে সবজি বাগানে পানি দিতে দেখেছেন। প্রতিদিন সকালে অফিস টাইমের পুর্বে ওসি সাহেব নিজেই বাগানের পরিচর্যা করে থাকেন বলে জানান তারা।
এক সময় চোরি, ডাকাতি ছিনতাই,খুন,ধর্ষণের জনপথ হিসেবে পরিচিত ছিল আমাদের এলাকা। এখন ময়মনসিংহের ক্রাইম জোন খ্যাত পাগলা থানা এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আমুল উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। ওসি রাশেদুজ্জামানের অক্লান্ত পরিশ্রম ও প্রচেষ্ঠায় এখন পাগলা থানা এলাকায় চোরি ডাকাতি ছিনতাইসহ সব ধরনের ক্রাইম অনেকটাই কমেগেছে।
থানার গেইটের সামনে কথা হয় নিগুয়ারী ইউনিয়নের বাসীন্দা আবু সাইদ,আবুল হোসেন ও সিরাজুল ইসলাম নামের তিন কৃষকের সাথে। তারা জানান পতিত জমিতে সবজি ও মৎস্য চাষ। তার উপর বাম্পার ফলন। পাগলাবাসীকে তাগ লাগিয়ে দিয়েছেন ওসি রাশেদুজ্জামান। আমরা পেশাদার কৃষক হয়েও কখনো এমন বাম্পার ফলন ফলাতে পারিনি। এখন ওসি রাশেদ সাহেবকে অনুসসরণ করে এতদ অঞ্চলের অধিকাংশ মানুষই পরিত্যক্ত ও পতিত জমিতে সবজি চাষ শুরু করেছেন। কিভাবে বাম্পার ফলন ফলানো যায় সে বিষয়ে পাগলা থানার জনপ্রিয় ওসি রাশেদুজ্জামানের কাছ থেকে অনেকেই পরামর্শ নিয়েই সবজি চাষে নেমেছেন। থানার বাহিরে একটি চাষ্টলে বসে কথা হয় শহিদুল ইসলাম নামের এক স্থানীয় বাসিন্দার সাথে তিনি এ্ প্রতিবেধককে জানান কর্মগুনে আলো ছড়ানো ওসি রাসেদুজ্জামান পাগলা থানার গন্ডি অতিক্রম করে গুটা ময়মনসিংহের সর্বত্রই সুনাম সুবেদিত। তিনি পাল্টে দিয়েছেন গুটা পাগলা থানা এলাকার চালচিত্র। থানায় সেবা নিতে আসা লোকজনকে অনাবাদি জমিতে সবজি চাষে উদৃবুদ্ধ করে থাকেন তিনি । জানা যায় গত ২ বছর আগেও থানার ভিতরের সব জায়গা পতিত অবস্থায় ছিল। রাসেদুজ্জান ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হিসেবে যোগদানের কিছু দিন পর থেকে বিভিন্ন ধরনের সবজি,ফুল ও ফল মৎস্য চাষ শুরু করা হয়।
পাগলা থানার ভাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ রাসেদুজ্জামান সাংবাদিক আব্দুল মান্নান পল্টনকে জানান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা এক ইঞ্চি জমি যেন পতিত বা অনাবাদি না থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সেই নির্দেশ বাস্তবায়নে লক্ষে ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার মাছুম আহমেদ ভুঞা স্যারের দিক নির্দেশনায় থানার পতিত জমিতে সবজি ও মৎস্য চাষের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিষমুক্ত এসব সবজি বাজারের তুলনায় অনেক ভালো। উৎপাদিত সবজি ও মাছ থানা পুলিশের চাহিদা পূরণ করে আশেপাশের এলাকার লোকদের মাঝেও বিতরণ করা হয়।’তিনি আরও বলেন, ‘দেশের সব সরকারি-বেসরকারি অফিসের প্রচুর পরিমাণে পতিত জমি রয়েছে। এসব জমিতে যদি চাষ করা যায় তাহলে সবজির উৎপাদন অনেক বাড়বে। যা দেশের সবজির চাহিদা পূরণে কিছুটা হলেও ভূমিকা রাখবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads